ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিকতা ছেড়ে দিন’—প্রতিনিধিকে ধমক উপজেলা প্রকৌশলীর দিঘলিয়া উপজেলায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। মুন্সিগঞ্জ সদরে নতুন ওসি যোগদানকৃত মমিনুল ইসলাম মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষণা। দুমকি উপজেলায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত।।  মুক্তাগাছায় বেগম রোকেয়া দিবস ‘২৫ পালিত রাজৈরে অনুষ্ঠিত হল দুর্নীতিবিরোধী ও বেগম রোকেয়া দিবসের আলোচনা সভা দিঘলিয়া উপজেলায় বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন: শ্রেষ্ঠ অদম্য নারীদের সম্মাননা প্রদান বেতাগীতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মোরেলগঞ্জে ছাত্রদলের দোয়া অনুষ্ঠিত ঝালকাঠিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

গুম ইস্যুতে আসছে আইন, গঠন হবে শক্তিশালী কমিশন: আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গুমের ঘটনা তদন্ত ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে এক মাসের মধ্যেই একটি নতুন আইন প্রণয়ন এবং এর আওতায় একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃত গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “গুমবিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ আইন আসছে। এই আইনের অধীনে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করা হবে।”

আইনটি পরবর্তী সরকার বাতিল করবে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেই সরকারই আসুক না কেন— বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি— সবাই কোনো না কোনোভাবে গুমের শিকার হয়েছেন। অতীতে তারাও এই ইস্যুতে সোচ্চার ছিলেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের ঘটনা ঘটেছে। তখন জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা দেশে আসতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি, এমনকি চিঠির জবাব পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।”

আসিফ নজরুল জানান, জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের গঠন এবং আইন প্রণয়নের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। তারা কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো এবং আইনি কাঠামোতে মিসিং পারসন সার্টিফিকেট, সার্চ কমিটি গঠন, এবং ভুক্তভোগী পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগের সুপারিশ করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরাও চাই কমিশনটি হোক সত্যিকার অর্থেই শক্তিশালী। তারা আমাদের আইনি পরামর্শ দিতে চেয়েছে। আমরাও বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করব।”

সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “সেখানে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের ধারণা আমরা দেখেছি। বাংলাদেশেও এটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।”

 

তিনি ব্যাখ্যা করেন, এ কমিশনের চারটি স্তর রয়েছে—

১. ট্রুথ সিকিং (সত্য অনুসন্ধান): জাতিসংঘের রিপোর্ট, চলমান ট্রাইব্যুনাল, তদন্ত এবং ‘জুলাই জাদুঘর’ এর মাধ্যমে এটি শুরু হয়েছে।

২. মেমোরিয়ালাইজেশন (স্মৃতি সংরক্ষণ): ফারুকীর জাদুঘরের মতো উদ্যোগগুলো এর অংশ।

৩. অ্যামনেস্টি (ক্ষমা): যারা গুরুতর অপরাধে যুক্ত নন, তাদের জন্য ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে।

৪. রিকনসিলিয়েশন ও ক্ষতিপূরণ: দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, যেমন— চাকরি দেওয়া, পুনঃস্থাপন ইত্যাদি।

 

আইন উপদেষ্টা জানান, পরবর্তী ধাপে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আঞ্চলিক এক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের অভিজ্ঞতা নেওয়া হবে এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি ও ছাত্র সমাজের অংশগ্রহণে পরামর্শ নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

গুম ইস্যুতে আসছে আইন, গঠন হবে শক্তিশালী কমিশন: আইন উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৩:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

গুমের ঘটনা তদন্ত ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে এক মাসের মধ্যেই একটি নতুন আইন প্রণয়ন এবং এর আওতায় একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃত গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “গুমবিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ আইন আসছে। এই আইনের অধীনে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করা হবে।”

আইনটি পরবর্তী সরকার বাতিল করবে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেই সরকারই আসুক না কেন— বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি— সবাই কোনো না কোনোভাবে গুমের শিকার হয়েছেন। অতীতে তারাও এই ইস্যুতে সোচ্চার ছিলেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের ঘটনা ঘটেছে। তখন জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা দেশে আসতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি, এমনকি চিঠির জবাব পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।”

আসিফ নজরুল জানান, জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের গঠন এবং আইন প্রণয়নের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। তারা কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো এবং আইনি কাঠামোতে মিসিং পারসন সার্টিফিকেট, সার্চ কমিটি গঠন, এবং ভুক্তভোগী পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগের সুপারিশ করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরাও চাই কমিশনটি হোক সত্যিকার অর্থেই শক্তিশালী। তারা আমাদের আইনি পরামর্শ দিতে চেয়েছে। আমরাও বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করব।”

সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “সেখানে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের ধারণা আমরা দেখেছি। বাংলাদেশেও এটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।”

 

তিনি ব্যাখ্যা করেন, এ কমিশনের চারটি স্তর রয়েছে—

১. ট্রুথ সিকিং (সত্য অনুসন্ধান): জাতিসংঘের রিপোর্ট, চলমান ট্রাইব্যুনাল, তদন্ত এবং ‘জুলাই জাদুঘর’ এর মাধ্যমে এটি শুরু হয়েছে।

২. মেমোরিয়ালাইজেশন (স্মৃতি সংরক্ষণ): ফারুকীর জাদুঘরের মতো উদ্যোগগুলো এর অংশ।

৩. অ্যামনেস্টি (ক্ষমা): যারা গুরুতর অপরাধে যুক্ত নন, তাদের জন্য ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে।

৪. রিকনসিলিয়েশন ও ক্ষতিপূরণ: দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, যেমন— চাকরি দেওয়া, পুনঃস্থাপন ইত্যাদি।

 

আইন উপদেষ্টা জানান, পরবর্তী ধাপে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আঞ্চলিক এক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের অভিজ্ঞতা নেওয়া হবে এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি ও ছাত্র সমাজের অংশগ্রহণে পরামর্শ নেওয়া হবে।