ভূরুঙ্গামারীতে ডিভোর্সি যুবকের কাছে মুক্তিপণ দাবিতে কথিত এক সাংবাদিক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ গ্রেফতার চার

- আপডেট সময় : ০৪:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ডিভোর্সি যুবকের কাছে মুক্তিপণের দাবিতে আটক ও মারধরের অভিযোগে কথিত এক সাংবাদিক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
শনিবার (৫ অক্টোবর) ভোররাতে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে বলে জানিয়েছেন, ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বলদিয়া ইউনিয়নের মোঃ আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে ৪/৫ মাস আগে স্ত্রী মোছাঃ রিতা বেগমের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এ বিষয়ে সালিশে উপস্থিত ছিলেন কথিত সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আরিফ, মাহবুব, ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাইদুল, ভুট্টুসহ আরো অনেকে। সে সময় এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে ডিভোর্স হয়।
চার পাঁচ মাস পর ৪ অক্টোবর (শনিবার ) বিকালে ইসমাইল তার বন্ধু আলাউদ্দিন কে সঙ্গে নিয়ে মোবাইল মেরামতের জন্য ভূরুঙ্গামারী আসলে পূর্বের সালিশে জড়িত কথিত সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মন্ডল ওরফে আরিফসহ কয়েকজন তাদের আটক করে। পরে তারা সালিশের খরচের অজুহাতে ভিকটিমের কাছে ৩০,০০০ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে প্রাণনাশ ও লাশ গুমের হুমকি দিয়ে জহির মার্কেটের একটি কক্ষে আটক রেখে মারধর করা হয়। এতে তারা ভিকটিমের পরিবারের কাছেও ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। পরে পরিবার থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই চারজনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া অজ্ঞাত আরো কয়েকজন আসামি রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চর ভূরুঙ্গামারীর (হুচারবালা) গ্রামের মোঃ আব্দুস সালামের ছেলে কথিত সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন মন্ডল ওরফে আরিফ, ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজ ছাত্রদল সেক্রেটারি ও আব্দুল গফুরের ছেলে মোঃ মুরাদ হাসান রেজুয়ান, সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও নুর ইসলামের ছেলে মোঃ শাহরিয়ার শাওন, দেওয়ানের খামারের আলম হোসেনের ছেলে মোঃ লুৎফর রহমান নিলয়।
এ সময় আসামি আনোয়ার হোসেনের ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে কথিত সাংবাদিক আনোয়ারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
বাকি তিনজন সরাসরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়। প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগে আনোয়ার, মাহবুব ও ছাত্রদল নেতা মাইদুলের সঙ্গে ভুক্তভোগী ইসমাইলের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন তারা ইসমাইলকে পেয়ে ধরে জহির মার্কেটের পেছনে মাহবুবের ঘরে নিয়ে যায়, যেখানে পরবর্তীতে মারধর ও মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, আনোয়ারের নামে তার নিজ এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের জমি লিখে নেওয়া, দালালি করা, মিথ্যা মামলার হুমকি দেওয়া, গোপন তথ্য নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা, পরকিয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার নামে মাদক মামলা ও অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ভূরুঙ্গামারী থানার জি আর ১৭৯/২৫ নং মামলায় আনোয়ার ও মাহবুব এজাহার ভুক্ত আসামি। এছাড়াও অজ্ঞাত ৬/৭ জন আসামি রয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার জি.আর ১৭৯/২৫ নং মামলায় আনোয়ার ও মাহবুব এজাহার ভুক্ত আসামি। এছাড়া অজ্ঞাত ৬/৭জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ বলেন, ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ডে কচাকাটার এক যুবককে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটনায় কথিত সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আটক করে টাকা দাবির ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে বলে জানিয়েছেন।