ঢাকা ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রক্ষাত সংগীতশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস ও বরিশালের বাউল ছালমা দর্শক মাতালেন মাদারীপুরে জামালপুর সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণের বিদায় সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত এনপিএসের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সম্মাননা স্মারক পেলেন সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চন্দ্র সরকার কেশবপুরে যুবদল নেতা উজ্জ্বলের জানাজায়  ভাই হত্যার বিচার চাইলেন কাউন্সিলর বাবু ১১ ডিসেম্বর কৃষকদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা জেলার নাগরিক প্লাটফম এর সদস্যদের নাগরিকদের অধিকার ও প্রাপ্যতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে যুবক আটক কেশবপুরের মঙ্গলকোটে সোনাতন ধর্মালম্বীদের  সাথে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীর মতবিনিময় মুক্তাগাছায় জনতার মুখোমুখি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ দুমকি উপজেলায়, যৌতুক মামলার প্রধান আসামি বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার

খালাস পেলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫ ৬৬ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করেন। সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় প্রদান করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ইমদাদুল হক, বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

রায়ের ফলে এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। আদালতে তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং প্রসিকিউশনের পক্ষে গাজী এম এইচ তামিম।

এই রায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এই প্রথম কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিকে আপিল বিভাগ খালাস দিলেন। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই এ মামলাকে ‘প্রহসনের রায়’ বলে দাবি করা হচ্ছিল।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অভিযোগ ছিল, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে তিনি ব্যাপক মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেন। তার বিরুদ্ধে মোট নয় ধরনের অভিযোগ আনা হয়—এর মধ্যে ছয়টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এসব অপরাধের মধ্যে ছিল ১,২৫৬ জনকে হত্যা বা গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং অসংখ্য ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।

রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারের আইনজীবীরা। তারা ১১৩টি যুক্তির মাধ্যমে তার নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন। ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে ২,৩৪০ পৃষ্ঠার পরিপূরক দলিল দাখিল করা হয়। আপিল বিভাগের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর সেই মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপর আজহার রিভিউ আবেদন করেন এবং ২০২৪ সালের ৮ মে সেই শুনানি শেষ হয়।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা। তাদের মধ্যে ছিলেন দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, মাসুদ সাঈদী, দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন এবং সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

খালাস পেলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম

আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করেন। সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় প্রদান করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ইমদাদুল হক, বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

রায়ের ফলে এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। আদালতে তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং প্রসিকিউশনের পক্ষে গাজী এম এইচ তামিম।

এই রায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এই প্রথম কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিকে আপিল বিভাগ খালাস দিলেন। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই এ মামলাকে ‘প্রহসনের রায়’ বলে দাবি করা হচ্ছিল।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অভিযোগ ছিল, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে তিনি ব্যাপক মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেন। তার বিরুদ্ধে মোট নয় ধরনের অভিযোগ আনা হয়—এর মধ্যে ছয়টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এসব অপরাধের মধ্যে ছিল ১,২৫৬ জনকে হত্যা বা গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং অসংখ্য ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।

রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারের আইনজীবীরা। তারা ১১৩টি যুক্তির মাধ্যমে তার নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন। ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে ২,৩৪০ পৃষ্ঠার পরিপূরক দলিল দাখিল করা হয়। আপিল বিভাগের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর সেই মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপর আজহার রিভিউ আবেদন করেন এবং ২০২৪ সালের ৮ মে সেই শুনানি শেষ হয়।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা। তাদের মধ্যে ছিলেন দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, মাসুদ সাঈদী, দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন এবং সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন।