ঢাকা ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মাথা গোজার ঠায় নেই, খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করে ভূরুঙ্গামারীর শহিদুলের পরিবার ভূরুঙ্গামারীতে বৃদ্ধ মা-বাবাকে মারধর ও বাবার তিনটি দাঁত ভাঙার ঘটনায় দুই ছেলে গ্রেফতার জয়পুরহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দিঘলিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার উদ্যোগে এককালীন, আজীবন ও সুধী সদস্য সম্মেলন-২৫ অনুষ্ঠিত হয় চৌদ্দগ্রামে ৮শত প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরন। খুলনায় সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা প্রেসক্লাব দিঘলিয়ার নেতৃবৃন্দ ফুলপুরে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতা রকিবুল হাসান সোহেলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ভূরুঙ্গামারীতে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের নতুন কমিটি গঠন ফুলপুরে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত সাবেক এমপি আবুল বাশার আকন্দ জামালপুরে জেলা যুবদলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ

গাজার মুসলমানদের ঈদ কাটলো যেভাবে

ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫ ৯২ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২৫ সালের ঈদুল আজহা গাজার মুসলমানদের জন্য আনন্দের নয়, বরং ধৈর্য, শোক আর প্রার্থনার দিন হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের দিনে ছিল না পশু কোরবানি, ছিল না নতুন জামা, বরং ছিল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়, খাদ্য সংকট ও প্রিয়জন হারানোর বেদনা।

মসজিদ ভাঙা, ঈদের নামাজ রাস্তায়

গাজায় ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে ধ্বংসস্তূপ, রাস্তা ও স্কুলের খোলা জায়গায়। অধিকাংশ মসজিদ আগেই ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।

 

গাজায় কোরবানির পশু নেই

গাজায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো গবাদিপশু প্রবেশ করেনি। ফলে পশু কোরবানি সম্ভব হয়নি। বহু পরিবার ঈদের দিন শুকনো রুটি ও মুঠো ভাত দিয়েই দিন পার করেছে।

 

শিশুদের ঈদের জামা নেই, খাবার নেই

গাজার শিশুদের ঈদের আনন্দ বলতে ছিল শুধু প্রশ্ন—“আমরা কি নতুন জামা পাব?” যার জবাবে মা-বাবারা বলেছে, “আমরা এখন শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।”

কারিমা নাজেল্লি নামের এক গৃহহীন নারী বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা, চারটি ঈদের একটিতেও আনন্দ দেখিনি। কোরবানি তো দূরে থাক, বিস্কুটও নেই।’

ঈদের সকাল কাটলো কবর জিয়ারতে

গাজার হাজারো মানুষ ঈদের দিন সকালে গেছেন শহীদ স্বজনদের কবরে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান কবরস্থানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দোয়া ও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সকাল।

 

স্থানীয়দের কণ্ঠে ঈদের বাস্তবতা

গাজা সিটির বাসিন্দা লায়লা হানিয়া বলেন— ‘আমার সন্তানদের ঈদে শুধু বলেছি, আমরা বেঁচে থাকাই ঈদের বড় নিয়ামত।’

 

মানবিক সংকট ও সহিংসতা

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৯০% মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

গাজায় এখন সন্ধ্যা ৭টা প্রায়। মুসলিম উম্মাহরে এই উৎসবের দিনে শহরটির অধিবাসীদের আনন্দ উদযাপনের পরিবর্তে এক বেদনার্ত ঈদ কাটলো। ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. ইউসুফ আল-কারজাভি যথার্থই বলেছেন— ‘যেখানে উৎসবের আয়োজন অসম্ভব, সেখানে ধৈর্যই ঈমানদারদের ঈদ।’ (ফিকহ আল সুনান আল মাওয়াসিম, ভ. ২) মহান আল্লাহ গাজাবাসীদের রহমত করুন, সবরের উত্তম পুরস্কার দান করুন।

 

সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গাজার মুসলমানদের ঈদ কাটলো যেভাবে

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

২০২৫ সালের ঈদুল আজহা গাজার মুসলমানদের জন্য আনন্দের নয়, বরং ধৈর্য, শোক আর প্রার্থনার দিন হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের দিনে ছিল না পশু কোরবানি, ছিল না নতুন জামা, বরং ছিল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়, খাদ্য সংকট ও প্রিয়জন হারানোর বেদনা।

মসজিদ ভাঙা, ঈদের নামাজ রাস্তায়

গাজায় ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে ধ্বংসস্তূপ, রাস্তা ও স্কুলের খোলা জায়গায়। অধিকাংশ মসজিদ আগেই ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।

 

গাজায় কোরবানির পশু নেই

গাজায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো গবাদিপশু প্রবেশ করেনি। ফলে পশু কোরবানি সম্ভব হয়নি। বহু পরিবার ঈদের দিন শুকনো রুটি ও মুঠো ভাত দিয়েই দিন পার করেছে।

 

শিশুদের ঈদের জামা নেই, খাবার নেই

গাজার শিশুদের ঈদের আনন্দ বলতে ছিল শুধু প্রশ্ন—“আমরা কি নতুন জামা পাব?” যার জবাবে মা-বাবারা বলেছে, “আমরা এখন শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।”

কারিমা নাজেল্লি নামের এক গৃহহীন নারী বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা, চারটি ঈদের একটিতেও আনন্দ দেখিনি। কোরবানি তো দূরে থাক, বিস্কুটও নেই।’

ঈদের সকাল কাটলো কবর জিয়ারতে

গাজার হাজারো মানুষ ঈদের দিন সকালে গেছেন শহীদ স্বজনদের কবরে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান কবরস্থানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দোয়া ও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সকাল।

 

স্থানীয়দের কণ্ঠে ঈদের বাস্তবতা

গাজা সিটির বাসিন্দা লায়লা হানিয়া বলেন— ‘আমার সন্তানদের ঈদে শুধু বলেছি, আমরা বেঁচে থাকাই ঈদের বড় নিয়ামত।’

 

মানবিক সংকট ও সহিংসতা

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৯০% মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

গাজায় এখন সন্ধ্যা ৭টা প্রায়। মুসলিম উম্মাহরে এই উৎসবের দিনে শহরটির অধিবাসীদের আনন্দ উদযাপনের পরিবর্তে এক বেদনার্ত ঈদ কাটলো। ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. ইউসুফ আল-কারজাভি যথার্থই বলেছেন— ‘যেখানে উৎসবের আয়োজন অসম্ভব, সেখানে ধৈর্যই ঈমানদারদের ঈদ।’ (ফিকহ আল সুনান আল মাওয়াসিম, ভ. ২) মহান আল্লাহ গাজাবাসীদের রহমত করুন, সবরের উত্তম পুরস্কার দান করুন।

 

সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস