বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন সংকট নিরসনে হল নির্মাণ, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অতি দ্রুত বাস্তবায়ন ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার।
বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন সংকট নিরসনে হল নির্মাণ, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অতি দ্রুত বাস্তবায়ন ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলের মোড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনশনস্থলে উপস্থিত হয়ে দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ। এ সময় অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান তিনি।
ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সারা দিন কাজ করেছি। আপনাদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। ইউজিসি একটি পরিবার হিসেবে সবাই মিলে এটার সমাধান করতে পারব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একসঙ্গে বসে সব সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নেয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত পড়ে শোনান জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবি বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দাবি অস্থায়ী হল নির্মাণ। সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অতি দ্রুত বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে, এখন কাজ চলছে।’
তিন দফা দাবিতে ১৪ মে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করলে কাকরাইল মোড়ে তাদের বাধা দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন। গতকাল তিন দফা দাবির সঙ্গে নতুন আরো এক দাবি যুক্ত হয়। সেটি হলো ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের চতুর্থ দাবি ছিল আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। হামলার ঘটনায় পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে। এছাড়া সাতদিনের মধ্যে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।’
চার দফা দাবিতে ১৪ মে থেকে কাকরাইল মোড় দখল করে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন সাবেক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। দুপুরের পর গণ-অনশনের ডাক দেন। এ সময় অন্তত ৩৮ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থী অনশনে বসেন।
এদিকে আন্দোলন স্থগিত করলেও দাবি বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে আবারো কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো যেহেতু মেনে নেয়া হয়েছে, তাই চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে এ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে আবার আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।