শিবচরের দত্তপাড়ায় কমলার বাগান করে স্বাবলম্বী রাসেল মিয়া
- আপডেট সময় : ০৮:০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে

অপি মুন্সী : শিবচর 🙁 মাদারীপুর ) প্রতিনিধি
মাদারীপুরের শিবচর দত্তপাড়া ইউনিয়নে সূর্যনগর গ্রাম। সবুজের আবরণে মোড়া, নীরব প্রকৃতির এক প্রশান্ত ঠিকানা। সেই গ্রামেই ৯ বিঘা জমিতে কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, ড্রাগন সবমিলিয়ে এখন বেশ বড় ফার্ম গড়েছেন প্রবাস ফেরত রাসেল হোসেন। এর মধ্যে দেড় বিঘা জায়গাজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যতিক্রমী এক কমলার বাগান, যা এখন শিবচরের মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।
গত ছয় বছর আগে লাগানো কমলার চারা এখন টানা দুই মৌসুম ধরে দিচ্ছে চমকপ্রদন ফলন। ছোট আকৃতির টক-মিষ্টি প্রজাতির এই কমলাগুলো গাছে গাছে ঝুলে থাকে থোকায় থোকায়। বাগানে ঢুকলেই ঘ্রাণে ভরে যায় চারদিক, চোখে পড়ে হলুদ-সবুজ রঙের মন ছুঁয়ে যাওয়া দৃশ্য। পাশাপাশি মাল্টা, পেয়ারা আর ড্রাগন ফলের চাষও বাগানটিকে করে তুলেছে একটি সমন্বিত ফলের খামার।
দত্তপাড়া মৃধাকান্দির লিজ নেওয়া জমিতে রাসেল গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নের এই উদ্যোগ। দেড় বিঘা জমিতে রোপণ করা ৭০টি কমলাগাছের বেশিরভাগই এখন নিয়মিত ফল দিচ্ছে। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ২৭০থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় এসব কমলা। ফরমালিনবিহীন ও তাজা হওয়ায় বহু ক্রেতা সরাসরি বাগানেই এসেই কিনতে।
যেখানে দেশে কমলা চাষ এখনও বিরল, সেখানে প্রবাস ফেরত এক যুবকের অধ্যবসায় শিবচরের মাটিতে লিখে দিয়েছে সফলতার নতুন অধ্যায়।
রাসেলের বাগান শুধু কৃষি উৎপাদনেই নয়, এলাকার তরুণদের মাঝেও জাগিয়ে তুলছে নতুন প্রেরণা ও উদ্যোগের সাহস। মাটির প্রতি টানে দেশে ফিরে গড়া এই বাগান শিবচরের কৃষিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
এলাকাবাসীর মতে, দেশে যেখানে কমলা চাষ এখনও অচেনা বাস্তবতা, সেখানে রাসেলের এই প্রচেষ্টা কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। তার বাগান নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা।
বাগানে কমলা কিনতে আসা একজ বলেন, গাছে পাকা কমলার স্বাদ এই প্রথম। অসাধারণ লাগল। তাই দুই কেজি নিলাম। সবচেয়ে ভালো লেগেছে কোনো রাসায়নিক নেই।
এ বিষয়ে বাগানের মালিক রাসেল হোসেন জানান, এই বাগান শুধু বাবার শখ নয়, আমার নিজেরও স্বপ্ন। সৌদি আরব থেকে ফিরে চাকরি করলেও মন পড়ে থাকত বাগানে। শেষে চাকরি ছেড়ে পুরো সময়টাই এখন কৃষিকাজে দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, গত মৌসুমে ফলন খুব ভালো ছিল। এবার ফল কিছুটা কম হলেও স্বাদ আরও দারুণ। ৯ বিঘা জমিতে কমলা ছাড়াও মাল্টা, পেয়ারা, ড্রাগন সবমিলিয়ে এখন বেশ বড় ফার্ম হয়ে গেছে। অনলাইনেও অর্ডার আসে, শিবচরেই সব বিক্রি হয়ে যায়। নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তার পরামর্শ—মাটিকে ভালোবাসতে হবে। পরিশ্রম ছাড়া সফলতা আসবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, রাসেলের বাগান এখন পরিপূর্ণ ফলনের পর্যায়ে। উৎপাদিত কমলার স্বাদ অত্যন্ত উন্নত। তাকে মিশ্র ফল বাগান প্রকল্পের আওতায় সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতে সার ব্যবহারের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা সহযোগিতা করবেন।


















