মুন্সিগঞ্জে জনপ্রিয় শীর্ষে ৮০-৯০ দশকের তুখোর কণ্ঠশিল্পী জহির আহমেদ
- আপডেট সময় : ১২:১২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে

মুন্সিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান জনপ্রিয় শীর্ষে ৮০-৯০ দশকের তুখোর কণ্ঠশিল্পী জহির আহমেদ এর সঙ্গে বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় আলোকিত সকাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ সুজন বেপারী সৌজন্যে সাক্ষাৎ বিনিময় আত্মপ্রকাশ।
এ-সময় জার্নালিস্টদের শিল্পী জহির আহমেদ বলেন, ‘যদি সব সাগরের জল, কালি হতো, পৃথিবীর সব গাছ লিখনি হতো আর সারাটা জীবন শুধু লিখে যেতাম, তবুও… তোমার আমার প্রেমের লেখা শেষ হতো না’, ‘তোমাকে হারাতে যদি হয়, লাগে মনে এই ভয়’, ‘যাই করো, প্রেমকে অবহেলা করো না’, ‘সবকিছু হারিয়ে প্রেমকে বুকে ধরে রেখেছি’, ‘ভালোবাসা হয় যদি অপরাধ, তবে দু’জনই সমান অপরাধী’, কাঁদবে তুমিও যদি আমি কাঁদি’, ‘তাজমহল দেখে মনে হয়, যেন আজও সে প্রেম এসে কথা কয়’ প্রভৃতি গানগুলো ‘প্রেম’Ñ নামের এ্যালবামের। এ্যালবামের ১২টি গানই সুপার হিট হয়। এখনও সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে প্রেম এ্যালবামটির গানগুলো হিট হয়ে আছে।-’৮০-’৯০ দশকের এই সব সারা জাগানো গানের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী জহির আহমেদ। এই শিল্পী আবার নতুন এ্যালবাম নিয়ে আসছেন। দীর্ঘ বিরতির পর জহির আহমেদ প্রায় ২১ বছর পর আবার আসছেন নতুন এ্যালবাম নিয়ে। রেকর্ডিংয়ের কাজ শেষ। এ্যালবামের নাম দিয়েছেন, ‘একাত্তর’-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কঙ্কালের আত্মকাহিনী’। ‘দোহাই তোমার কাছে এসো একবার, ভয় পেয়ো না শোনো আমি এক মৃত মানুষের হাড়’ গানের কলিতে এই ক্যাসেটটি হবে ৩০ মিনিটের। এখানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিছু কথা ও একটি গান থাকবে। নতুন এ্যালবাম প্রসঙ্গে জহির আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর নারায়নগঞ্জে যাওয়ার পথে ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে একটি কঙ্কাল দেখতে পান তিনি। এক যুবক বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে শহীদ হয়েছেন-কঙ্কালটির এমন ধারণা নেন তিনি। এই ধারণা নিয়ে তিনি এই এ্যালবাম বের করছেন। এ্যালবামে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং পাকিস্থানীদের শোষণের কিছু কথা ও গানে তা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি এর সিডি কয়েকজন মন্ত্রীকে দিয়েছেন পরিবর্তন ও পরিমার্জন করার জন্য। সেখান থেকে সারা না পেলে জহির আহমেদ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাবেন। তাদের সারা না দেয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে এ্যালবামটি শ্রোতাদের জন্য বাজারে ছাড়বেন।
তিনি এ যাবত কোন এ্যালবামই কারও সহযোগিতা নিয়ে বাজারে ছাড়েননি। এ্যালবাম নিজ খরচে রেকর্ড করার পর তা অডিও ক্যাসেট কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন। কণ্ঠশিল্পী জহির আহমেদ বলেন, তিনি ব্যবসার জন্ম গান করেন না। শখে গান করেন। তার বাবা আলহাজ আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মামা হাজী আনছার আলী ভালাগান গাইতেন। এতে তার গানের প্রতি আগ্রহ জন্মে। তিনি একা একাই গান গাইতে ও লিখতে থাকেন। এরপর তিনি তার বাবার পকেট থেকে ৬০ টাকা নিয়ে একটি হারমোনিয়াম কিনে গান শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে জহির আহমেদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে অডিশনে অংশ নেন। স্বাধীনতার আগে হিজ মাস্টার ভয়েজ কোম্পানির, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকাতে গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তার লেখা ও সুরে, দুটি গণসঙ্গীতও রেকর্ড করা হয়। সে গণসঙ্গীত দুটি ছিল কোরাস। শিল্পী ছিলেন তিনি নিজে, রেজা মজিদ, আলেয়া শরাফি ও লিলি হক। ১৯৬৮-৬৯ সালে শিল্পী জহির আহমেদ সর্ব প্রথম ঢাকার ওয়াপদা মিলনায়তনে মো. আবদুল জব্বার, আবদুল আলীম, নীনা হামিদ, মলয় কুমার গাঙ্গুলী ও মুন্নী বেগম এক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তার পরই তিনি টেলিভিশনে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। জনপ্রিয় শিল্পী জহির আহমেদের মতে, এখন ভাল মানের গান হয় না। দেশীয় সংস্কৃতি অনেকটাই হুমকির মুখে। আধুনিক গানের সুন্দর ও মিষ্টি কথাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভৌতিক ও কল্পনার গান আমি গাইতে পারি না, চোখে যা দেখি, শুনি এবং বাস্তবের নিরিখে গান করি।


















