ঢাকা ১০:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুমকি উপজেলায়, যৌতুক মামলার প্রধান আসামি বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার ত্রিশালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিএনএফ শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠিত জামালপুর পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে র‍্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দিলেন দিনাজপুরে সকল অফিসার ইনচার্জদের বদলি উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত প্রার্থীর মতবিনিময় সভা মনুষ্যত্বের চর্চায় শিক্ষকতা, সত্যের সন্ধানে সাংবাদিকতা’এম নজরুল ইসলাম খান বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর জব্বারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গজারিয়া সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী কামরুজ্জামান রতন কেশবপুরে জেন্ডার সচেতনতা ও সহিংসতা  প্রতিরোধ বিষয়ক এক দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মোরেলগঞ্জে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ : মানববন্ধনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে সারা দেশের মোট ডেঙ্গু রোগীর চার ভাগের এক ভাগ রোগী শনাক্ত হয়েছে বরগুনা জেলায়। এখন পর্যন্ত এ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে ৩ জনের, বাকি মৃত্যুগুলো ঘটেছে বিভিন্ন বেসরকারি ও জেলা উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

বরগুনা জেলায় এখন পর্যন্ত ১,৫০০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৫৮ জন রোগী। ১২ লাখ মানুষের এই জেলায় একমাত্র সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার রয়েছেন মাত্র ১০ জন, যার মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন ছুটিতে। এমন জরুরি অবস্থাতেও বরগুনাকে ‘ডেঙ্গু হটস্পট’ ঘোষণা না করায় এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রাস্তায় নেমেছে বরগুনার সাধারণ মানুষ।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নারী কর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে সকাল ১১টায় একই স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপি। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, ও সাবেক সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ ফারুক।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নাসরিন আক্তার শিমু বলেন, অব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে তাদের সহকর্মী মোনালিসা জেরিন এবং কিশোরী উপমাসহ অনেকের অকাল মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই সংকট এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।

বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, সারা দেশে যেখানে ডেঙ্গু রোগী সাড়ে ৪ হাজার, সেখানে একাই বরগুনায় দেড় হাজার রোগী শনাক্ত হওয়া উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ছুটিতে যাওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতার শামিল।

বরগুনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের ব্যানারে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও স্বাস্থ্য বিভাগকে নিয়ে একাধিক জরুরি সভা করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং হাসপাতালের সেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের কন্যা মোনালিসা জেরিন ও জেলা বিএনপি নেতার কন্যা উপমার মৃত্যুর পর আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করে। বিএনপির নেতারা বলেন, এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও সচিবের ব্যর্থতা সুস্পষ্ট এবং তাদের পদত্যাগ ছাড়া এই দায় মেটানো সম্ভব নয়।

বরগুনায় অবিলম্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স নিয়োগ, মশা নিধন কার্যক্রম ও সরকারি নজরদারি জোরদারের দাবি তুলেছেন বক্তারা। তারা বলেন, আর বিলম্ব হলে বরগুনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ : মানববন্ধনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে সারা দেশের মোট ডেঙ্গু রোগীর চার ভাগের এক ভাগ রোগী শনাক্ত হয়েছে বরগুনা জেলায়। এখন পর্যন্ত এ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে ৩ জনের, বাকি মৃত্যুগুলো ঘটেছে বিভিন্ন বেসরকারি ও জেলা উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

বরগুনা জেলায় এখন পর্যন্ত ১,৫০০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৫৮ জন রোগী। ১২ লাখ মানুষের এই জেলায় একমাত্র সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার রয়েছেন মাত্র ১০ জন, যার মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন ছুটিতে। এমন জরুরি অবস্থাতেও বরগুনাকে ‘ডেঙ্গু হটস্পট’ ঘোষণা না করায় এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রাস্তায় নেমেছে বরগুনার সাধারণ মানুষ।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নারী কর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে সকাল ১১টায় একই স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপি। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, ও সাবেক সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ ফারুক।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নাসরিন আক্তার শিমু বলেন, অব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে তাদের সহকর্মী মোনালিসা জেরিন এবং কিশোরী উপমাসহ অনেকের অকাল মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই সংকট এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।

বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, সারা দেশে যেখানে ডেঙ্গু রোগী সাড়ে ৪ হাজার, সেখানে একাই বরগুনায় দেড় হাজার রোগী শনাক্ত হওয়া উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ছুটিতে যাওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতার শামিল।

বরগুনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের ব্যানারে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও স্বাস্থ্য বিভাগকে নিয়ে একাধিক জরুরি সভা করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং হাসপাতালের সেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের কন্যা মোনালিসা জেরিন ও জেলা বিএনপি নেতার কন্যা উপমার মৃত্যুর পর আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করে। বিএনপির নেতারা বলেন, এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও সচিবের ব্যর্থতা সুস্পষ্ট এবং তাদের পদত্যাগ ছাড়া এই দায় মেটানো সম্ভব নয়।

বরগুনায় অবিলম্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স নিয়োগ, মশা নিধন কার্যক্রম ও সরকারি নজরদারি জোরদারের দাবি তুলেছেন বক্তারা। তারা বলেন, আর বিলম্ব হলে বরগুনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।