বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ : মানববন্ধনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
- আপডেট সময় : ০৫:৫৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে সারা দেশের মোট ডেঙ্গু রোগীর চার ভাগের এক ভাগ রোগী শনাক্ত হয়েছে বরগুনা জেলায়। এখন পর্যন্ত এ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে ৩ জনের, বাকি মৃত্যুগুলো ঘটেছে বিভিন্ন বেসরকারি ও জেলা উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
বরগুনা জেলায় এখন পর্যন্ত ১,৫০০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৫৮ জন রোগী। ১২ লাখ মানুষের এই জেলায় একমাত্র সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার রয়েছেন মাত্র ১০ জন, যার মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন ছুটিতে। এমন জরুরি অবস্থাতেও বরগুনাকে ‘ডেঙ্গু হটস্পট’ ঘোষণা না করায় এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রাস্তায় নেমেছে বরগুনার সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নারী কর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে সকাল ১১টায় একই স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপি। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, ও সাবেক সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ ফারুক।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নাসরিন আক্তার শিমু বলেন, অব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে তাদের সহকর্মী মোনালিসা জেরিন এবং কিশোরী উপমাসহ অনেকের অকাল মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই সংকট এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, সারা দেশে যেখানে ডেঙ্গু রোগী সাড়ে ৪ হাজার, সেখানে একাই বরগুনায় দেড় হাজার রোগী শনাক্ত হওয়া উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ছুটিতে যাওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতার শামিল।
বরগুনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের ব্যানারে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও স্বাস্থ্য বিভাগকে নিয়ে একাধিক জরুরি সভা করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং হাসপাতালের সেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের কন্যা মোনালিসা জেরিন ও জেলা বিএনপি নেতার কন্যা উপমার মৃত্যুর পর আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করে। বিএনপির নেতারা বলেন, এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও সচিবের ব্যর্থতা সুস্পষ্ট এবং তাদের পদত্যাগ ছাড়া এই দায় মেটানো সম্ভব নয়।
বরগুনায় অবিলম্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স নিয়োগ, মশা নিধন কার্যক্রম ও সরকারি নজরদারি জোরদারের দাবি তুলেছেন বক্তারা। তারা বলেন, আর বিলম্ব হলে বরগুনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।



















