ঢাকা ০৫:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুমকি উপজেলায়, যৌতুক মামলার প্রধান আসামি বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার ত্রিশালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিএনএফ শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠিত জামালপুর পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে র‍্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দিলেন দিনাজপুরে সকল অফিসার ইনচার্জদের বদলি উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত প্রার্থীর মতবিনিময় সভা মনুষ্যত্বের চর্চায় শিক্ষকতা, সত্যের সন্ধানে সাংবাদিকতা’এম নজরুল ইসলাম খান বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর জব্বারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গজারিয়া সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী কামরুজ্জামান রতন কেশবপুরে জেন্ডার সচেতনতা ও সহিংসতা  প্রতিরোধ বিষয়ক এক দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মোরেলগঞ্জে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত

গাজার মুসলমানদের ঈদ কাটলো যেভাবে

ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫ ৯৯ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২৫ সালের ঈদুল আজহা গাজার মুসলমানদের জন্য আনন্দের নয়, বরং ধৈর্য, শোক আর প্রার্থনার দিন হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের দিনে ছিল না পশু কোরবানি, ছিল না নতুন জামা, বরং ছিল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়, খাদ্য সংকট ও প্রিয়জন হারানোর বেদনা।

মসজিদ ভাঙা, ঈদের নামাজ রাস্তায়

গাজায় ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে ধ্বংসস্তূপ, রাস্তা ও স্কুলের খোলা জায়গায়। অধিকাংশ মসজিদ আগেই ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।

 

গাজায় কোরবানির পশু নেই

গাজায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো গবাদিপশু প্রবেশ করেনি। ফলে পশু কোরবানি সম্ভব হয়নি। বহু পরিবার ঈদের দিন শুকনো রুটি ও মুঠো ভাত দিয়েই দিন পার করেছে।

 

শিশুদের ঈদের জামা নেই, খাবার নেই

গাজার শিশুদের ঈদের আনন্দ বলতে ছিল শুধু প্রশ্ন—“আমরা কি নতুন জামা পাব?” যার জবাবে মা-বাবারা বলেছে, “আমরা এখন শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।”

কারিমা নাজেল্লি নামের এক গৃহহীন নারী বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা, চারটি ঈদের একটিতেও আনন্দ দেখিনি। কোরবানি তো দূরে থাক, বিস্কুটও নেই।’

ঈদের সকাল কাটলো কবর জিয়ারতে

গাজার হাজারো মানুষ ঈদের দিন সকালে গেছেন শহীদ স্বজনদের কবরে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান কবরস্থানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দোয়া ও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সকাল।

 

স্থানীয়দের কণ্ঠে ঈদের বাস্তবতা

গাজা সিটির বাসিন্দা লায়লা হানিয়া বলেন— ‘আমার সন্তানদের ঈদে শুধু বলেছি, আমরা বেঁচে থাকাই ঈদের বড় নিয়ামত।’

 

মানবিক সংকট ও সহিংসতা

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৯০% মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

গাজায় এখন সন্ধ্যা ৭টা প্রায়। মুসলিম উম্মাহরে এই উৎসবের দিনে শহরটির অধিবাসীদের আনন্দ উদযাপনের পরিবর্তে এক বেদনার্ত ঈদ কাটলো। ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. ইউসুফ আল-কারজাভি যথার্থই বলেছেন— ‘যেখানে উৎসবের আয়োজন অসম্ভব, সেখানে ধৈর্যই ঈমানদারদের ঈদ।’ (ফিকহ আল সুনান আল মাওয়াসিম, ভ. ২) মহান আল্লাহ গাজাবাসীদের রহমত করুন, সবরের উত্তম পুরস্কার দান করুন।

 

সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গাজার মুসলমানদের ঈদ কাটলো যেভাবে

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

২০২৫ সালের ঈদুল আজহা গাজার মুসলমানদের জন্য আনন্দের নয়, বরং ধৈর্য, শোক আর প্রার্থনার দিন হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের দিনে ছিল না পশু কোরবানি, ছিল না নতুন জামা, বরং ছিল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়, খাদ্য সংকট ও প্রিয়জন হারানোর বেদনা।

মসজিদ ভাঙা, ঈদের নামাজ রাস্তায়

গাজায় ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে ধ্বংসস্তূপ, রাস্তা ও স্কুলের খোলা জায়গায়। অধিকাংশ মসজিদ আগেই ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।

 

গাজায় কোরবানির পশু নেই

গাজায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো গবাদিপশু প্রবেশ করেনি। ফলে পশু কোরবানি সম্ভব হয়নি। বহু পরিবার ঈদের দিন শুকনো রুটি ও মুঠো ভাত দিয়েই দিন পার করেছে।

 

শিশুদের ঈদের জামা নেই, খাবার নেই

গাজার শিশুদের ঈদের আনন্দ বলতে ছিল শুধু প্রশ্ন—“আমরা কি নতুন জামা পাব?” যার জবাবে মা-বাবারা বলেছে, “আমরা এখন শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।”

কারিমা নাজেল্লি নামের এক গৃহহীন নারী বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা, চারটি ঈদের একটিতেও আনন্দ দেখিনি। কোরবানি তো দূরে থাক, বিস্কুটও নেই।’

ঈদের সকাল কাটলো কবর জিয়ারতে

গাজার হাজারো মানুষ ঈদের দিন সকালে গেছেন শহীদ স্বজনদের কবরে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান কবরস্থানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দোয়া ও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সকাল।

 

স্থানীয়দের কণ্ঠে ঈদের বাস্তবতা

গাজা সিটির বাসিন্দা লায়লা হানিয়া বলেন— ‘আমার সন্তানদের ঈদে শুধু বলেছি, আমরা বেঁচে থাকাই ঈদের বড় নিয়ামত।’

 

মানবিক সংকট ও সহিংসতা

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৯০% মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

গাজায় এখন সন্ধ্যা ৭টা প্রায়। মুসলিম উম্মাহরে এই উৎসবের দিনে শহরটির অধিবাসীদের আনন্দ উদযাপনের পরিবর্তে এক বেদনার্ত ঈদ কাটলো। ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. ইউসুফ আল-কারজাভি যথার্থই বলেছেন— ‘যেখানে উৎসবের আয়োজন অসম্ভব, সেখানে ধৈর্যই ঈমানদারদের ঈদ।’ (ফিকহ আল সুনান আল মাওয়াসিম, ভ. ২) মহান আল্লাহ গাজাবাসীদের রহমত করুন, সবরের উত্তম পুরস্কার দান করুন।

 

সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস