ঢাকা ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাঘাটা উপজেলায় নাগরিক প্লাটফম এর ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত ঠিকাদারের পক্ষে ফরমায়েসী সংবাদের প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন কেশবপুরে মাটি কাটার অভিযোগে ৫০  হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ সাঘাটা হানাদারমুক্ত দিবস পালন: বীরত্বের ইতিহাসে উচ্ছ্বাসমুখর মানবসমাগম মুক্তাগাছায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যোগদান উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ২০২৫’র পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান- গ্রাম আদালত কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে স্থানীয় অংশীজনদের সাথে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত কেশবপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে   মতবিনিময় করেন পাখা মার্কা প্রার্থী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় উপজেলা প্রেসক্লাব দিঘলিয়ায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ফকিরহাটে বিষমুক্ত বেগুন চাষে প্রথমবারেই মুরাদের বাজিমাত

আমি এখন স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক- আজহারুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
Jbangla.com অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর কারামুক্ত হয়ে জনসমক্ষে আসেন। বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে বের হয়ে শাহবাগ মোড়ে দলীয় জনসভায় যোগ দেন। হাসপাতাল গেটেই তাকে স্বাগত জানান জামায়াতের নেতাকর্মীরা। জনসভায় আবেগঘন কণ্ঠে বক্তব্য দেন তিনি।

সমাবেশের মঞ্চে উঠে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এটিএম আজহার বলেন, “প্রায় ১৪ বছর পর আমি আজ ছাড়া পেলাম। আমি এখন মুক্ত। আমি এখন স্বাধীন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এখন স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক। আল্লাহ যদি তৌফিক দেন, অবশ্যই বাকি জীবন আপনাদের সাথেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।”

তিনি এই মুক্তিকে একটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফলাফল বলে উল্লেখ করেন। বলেন, “এই মুক্তি শুধু আমার নয়, এটি একটি অন্যায় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার বিরুদ্ধে সত্যের জয়। আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকে না। আজ সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি সর্বপ্রথম আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তবে এটাও সত্য যে, এতদিন দেশে ন্যায়বিচার ছিল না। বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের বহু ভাইকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি তার মুক্তির পেছনে আইনজীবীদের অবদান স্মরণ করে বলেন, “আমার আইনজীবীরা দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তারা সঠিক দলিল-দস্তাবেজ ও যুক্তি তুলে ধরে প্রমাণ করেছেন, এই মামলার কোনো ভিত্তি ছিল না। আল্লাহর রহমতে আমি আজ মুক্ত। তবে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন, তাদের আর ফেরানো যাবে না।”

জনসভায় এটিএম আজহারুল ইসলাম ৩৬ জুলাইয়ের ‘মহাবিপ্লব’ এবং ৫ আগস্টের ঘটনার প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, “আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই ৩৬ জুলাইয়ের মহাবিপ্লবীদের, যাদের রক্ত, ঘাম আর আন্দোলনের ফসল আজকের এই মুক্তি। তাদের কারণেই ৫ আগস্ট একটি স্বৈরাচারী সরকারের পতন সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে নিজেদের রক্ত ঢেলে, ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন, আমি তাদের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করি। এই আত্মত্যাগই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য আলোর দিশা দেখাবে।”

ভবিষ্যতের লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “এই মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে আমার ওপর আরও বড় দায়িত্ব এসে পড়েছে। আমি অঙ্গীকার করছি, আল্লাহ যদি আমাকে তৌফিক দেন, তবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার এবং ইসলামি মূল্যবোধের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকবো, ইনশাআল্লাহ।”

বক্তব্যের শেষদিকে তিনি আবারও আন্দোলনের পথে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “আমরা কখনও অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি, করবোও না। আমাদের আন্দোলন থেমে নেই, থামবেও না। আজ থেকে আবার নতুনভাবে পথচলা শুরু হলো।”

এ জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এখন স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক- আজহারুল ইসলাম

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর কারামুক্ত হয়ে জনসমক্ষে আসেন। বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে বের হয়ে শাহবাগ মোড়ে দলীয় জনসভায় যোগ দেন। হাসপাতাল গেটেই তাকে স্বাগত জানান জামায়াতের নেতাকর্মীরা। জনসভায় আবেগঘন কণ্ঠে বক্তব্য দেন তিনি।

সমাবেশের মঞ্চে উঠে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এটিএম আজহার বলেন, “প্রায় ১৪ বছর পর আমি আজ ছাড়া পেলাম। আমি এখন মুক্ত। আমি এখন স্বাধীন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এখন স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক। আল্লাহ যদি তৌফিক দেন, অবশ্যই বাকি জীবন আপনাদের সাথেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।”

তিনি এই মুক্তিকে একটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফলাফল বলে উল্লেখ করেন। বলেন, “এই মুক্তি শুধু আমার নয়, এটি একটি অন্যায় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার বিরুদ্ধে সত্যের জয়। আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকে না। আজ সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি সর্বপ্রথম আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তবে এটাও সত্য যে, এতদিন দেশে ন্যায়বিচার ছিল না। বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের বহু ভাইকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি তার মুক্তির পেছনে আইনজীবীদের অবদান স্মরণ করে বলেন, “আমার আইনজীবীরা দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তারা সঠিক দলিল-দস্তাবেজ ও যুক্তি তুলে ধরে প্রমাণ করেছেন, এই মামলার কোনো ভিত্তি ছিল না। আল্লাহর রহমতে আমি আজ মুক্ত। তবে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন, তাদের আর ফেরানো যাবে না।”

জনসভায় এটিএম আজহারুল ইসলাম ৩৬ জুলাইয়ের ‘মহাবিপ্লব’ এবং ৫ আগস্টের ঘটনার প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, “আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই ৩৬ জুলাইয়ের মহাবিপ্লবীদের, যাদের রক্ত, ঘাম আর আন্দোলনের ফসল আজকের এই মুক্তি। তাদের কারণেই ৫ আগস্ট একটি স্বৈরাচারী সরকারের পতন সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে নিজেদের রক্ত ঢেলে, ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন, আমি তাদের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করি। এই আত্মত্যাগই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য আলোর দিশা দেখাবে।”

ভবিষ্যতের লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “এই মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে আমার ওপর আরও বড় দায়িত্ব এসে পড়েছে। আমি অঙ্গীকার করছি, আল্লাহ যদি আমাকে তৌফিক দেন, তবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার এবং ইসলামি মূল্যবোধের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকবো, ইনশাআল্লাহ।”

বক্তব্যের শেষদিকে তিনি আবারও আন্দোলনের পথে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “আমরা কখনও অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি, করবোও না। আমাদের আন্দোলন থেমে নেই, থামবেও না। আজ থেকে আবার নতুনভাবে পথচলা শুরু হলো।”

এ জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা।