মনুষ্যত্বের চর্চায় শিক্ষকতা, সত্যের সন্ধানে সাংবাদিকতা’এম নজরুল ইসলাম খান
- আপডেট সময় : ০৫:০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

মনুষ্যত্বের বিনির্মাণে শিক্ষকতা একটি মহান পেশাই নয় একটি ব্রত।সত্যের অনুসন্ধানে সততা,বস্তুনিষ্ঠতা ও দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি পেশা সাংবাদিকতা।এই দুইটি পেশাতেই আমার কম বেশি বিচরণ প্রায় ২ দশকের বেশি।
শিক্ষকতা মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ ও পবিত্রতম দায়িত্ব। একজন শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না; তিনি জাতির মেরুদণ্ড গঠনের সূক্ষ্ম কারিগর। মহান সাধকের বাণী — “গুরু বিনা জ্ঞান নেই, আর জ্ঞান বিনা মুক্তি নেই”—আজও শিক্ষার মৌলিক সত্যকে স্পষ্ট করে। শিক্ষকের শিক্ষার আলোয় অজ্ঞতার অন্ধকার দূর হয়, জেগে ওঠে মনুষ্যত্বের বোধ। একজন শিক্ষকের ছোট একটি কথা, একটি পরামর্শ, একটি দৃষ্টিভঙ্গি—একজন শিক্ষার্থীর জীবনকে বদলে দিতে পারে।পৃথিবীর সকল পেশার শুরুতেই শিক্ষকদের প্রয়োজন শিক্ষকতা এমন একটি পেশা যে পেশার কাছে সকল পেশার শিক্ষা নিতে হয়।
অন্যদিকে বাস্তবতাকে উন্মোচন করতে স্বচ্ছ অনুসন্ধানে সাংবাদিকতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেশা ।সাংবাদিকতা সত্যের নিরবচ্ছিন্ন অনুসন্ধান—যেখানে সাহস, সততা ও ন্যায়ের প্রতি অটল দায়বদ্ধতা অপরিহার্য।
— “সত্যের পথে দাঁড়াইলে ভয় থাকে না; সত্য মানুষকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়”—
একজন সাংবাদিকের কলম অন্ধকারের বিরুদ্ধে এক দীপশিখা, যা দুর্নীতি, অবিচার, বৈষম্য ও মিথ্যার বিরুদ্ধে আলো ছড়ায়। সমাজের নীরব মানুষের কণ্ঠ হয়ে ওঠে সাংবাদিকতা। রাষ্ট্রের অন্য তিনটি স্তম্ভকে পরিশুদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক রাখতে সাংবাদিকতা হলো চতুর্থ স্তম্ভ—গণতন্ত্রের প্রহরী, মানবাধিকারের রক্ষাকবচ।সংবাদপত্র হচ্ছে সমাজের বা রাষ্ট্রের দর্পণ সমাজে যা ঘটে যা সংবাদপত্রে উন্মোচিত হয় ।শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা—এই দুই অঙ্গনই একটি জাতির মূলভিত্তি। শিক্ষক মানুষ গড়েন; সাংবাদিক সেই মানুষের বিবেককে সজাগ রাখেন। শিক্ষকতার লক্ষ্য চরিত্রবান, জ্ঞানসম্পন্ন, মানবিক মানুষ তৈরি করা। সাংবাদিকতার লক্ষ্য সমাজকে সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত রাখা। একটি জ্ঞানবান মানুষ যখন সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়—তখনই জন্ম নেয় প্রকৃত দেশপ্রেম, জন্ম নেয় উন্নত, ন্যায়ভিত্তিক, সচেতন একটি জাতি।
তাই শিক্ষকতা হচ্ছে চেতনার জাগ্রত করা এবং মানুষত্বকে বাঁচিয়ে রেখে মানুষকে প্রকৃত মানুষ তৈরি করা আর সাংবাদিকতা হচ্ছে সকল বিষয়ের দায়িত্ববোধ বস্তুনিষ্ঠতা সত্যতা এবং সাহসিকতা ।
মনুষ্যত্বের চর্চা ছাড়া শিক্ষা অসম্পূর্ণ; সত্যের সন্ধান ছাড়া সাংবাদিকতা অর্থহীন। তাই এই দুই শক্তির মিলনেই গড়ে ওঠে আলোকিত প্রজন্ম, ন্যায়পরায়ণ সমাজ এবং সমৃদ্ধ দেশ। শিক্ষকতা জাতির বিবেক সৃষ্টি করে আর সাংবাদিকতা সেই বিবেককে পথ দেখায়। এ কারণেই শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা কেবল দুটি পেশা নয়—দুটি মহৎ ব্রত, দুটি চিরন্তন মানবিক দায়িত্ব।
মানুষ গড়ার পেশায় শিক্ষক তেমনি মানবতার জাগরণে সাংবাদিকতা।আমার শিক্ষকতা পেশা মানুষ গড়ার কর্তব্যবোধ থেকে আর সাংবাদিকতা সচেতন সমাজ বিনির্মানে। সততা,বস্তুনিষ্ঠতা, দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতার যেন দ্বৈত সাধনা।


















