গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনায় ২ গ্রাম পুলিশকে পেটানোর অভিযোগ, থানায় মামলা
- আপডেট সময় : ০৮:০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বজিৎ চন্দ্র সরকার : বিশেষ প্রতিনিধি।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রাম পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের জোয়ারিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার রাতে এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকে প্রধান আসামি করে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও সাতজনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোসলেম আলী।
মামলার আসামিরা:
মামলার এজাহার অনুযায়ী, আসামিরা হলেন—
গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ (প্রধান আসামি)
ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বাইন
হৃদয় তালুকদার ভোলা
অয়ন বাইন
ঘটনার বিবরণ:
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে পাটগাতী ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কৃপা মণ্ডল ও সুরজিত ঘরামী বিশেষ কাজে গোপালপুর গেলে ফেরার পথে তারা এসআই মোসলেম আলীকে জানান যে জোয়ারিয়া এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট কেনাবেচা চলছে।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজন বিশ্বাস নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ১৪ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। এসময় তার সঙ্গে থাকা আরও তিনজন পালিয়ে যায়। আটক বিজনকে থানায় নেওয়ার সময় গ্রাম পুলিশের দুই সদস্য পুলিশকে অনুসরণ করছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, কিছুদূর যাওয়ার পর বিএনপি নেতা জীবেশ বাড়ৈয়ের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক দুই গ্রাম পুলিশের গতিরোধ করেন। তারা বিজনকে ধরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে বকাঝকা করেন এবং গাছের ডাল দিয়ে দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর করেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা হত্যার হুমকি দিয়ে সরে যায়।
ঘটনার পর আহত কৃপা মণ্ডল ও সুরজিত ঘরামীকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে আটক বিজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদাভাবে মামলা দিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আহত গ্রাম পুলিশের বক্তব্য:
আহত কৃপা ও সুরজিত বলেন,
“পুলিশ বিজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা পিছনে আসতেই বিএনপি নেতা জীবেশ বাড়ৈ কয়েকজনকে নিয়ে আমাদের গতিরোধ করেন। তারপর বিজনকে ধরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে আমাদের মারধর করেন। আমরা বিচার চাই।”
বিএনপি নেতার দাবি:
এ অভিযোগ অস্বীকার করে গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ বলেন,
“গ্রাম পুলিশ দুজন পাটগাতী থেকে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের পরিচয় জানার পর সঙ্গে থাকা কিছু লোক তাদের কিছু কথা বলেছে, কিন্তু কেউ পেটায়নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
পুলিশের বক্তব্য:
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন,
“দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


















